একজন চা বিক্রেতা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আর একজন চা বিক্রেতা হয়েছেন বড় ব্যবসাদার। মাসে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকার চা বিক্রি করেন তিনি।
না, ছাপার ভুল নয়। ঠিক পড়ছেন। চা বিক্রি করেই আজ তিনি লাখপতি। চায়ের দোকান তাঁর। একা সামলাতে পারেন না। বেশ কয়েকজনকে তাই ‘চাকরি’ দিয়েছেন। হ্যাঁ, চায়ের দোকানেই। এই ধনী চা বিক্রেতা মহারাষ্ট্রের মানুষ। নাম নবনাথ ইওয়েল।
সম্প্রতি এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নবনাথ জানিয়েছেন, ব্যবসাকে আরও বড় করার কথা ভাবছেন তিনি। শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও তাঁর হাতের তৈরি চা ছড়িয়ে দিতে চান। বলেছেন, ‘এই চায়ের ব্যবসাকে একটি আর্ন্তজাতিক ব্র্যান্ডে পরিণত করার পরিকল্পনা আছে। অনেকদিন ধরেই ভাবছি। এবার কাজ শুরু করে দেব।’
২০১১ সালে পুনেতে চায়ের দোকান খোলেন নবনাথ। তাঁর মনে হয়েছিল, ভারতের মতো দেশের সকলেই চা-প্রেমী। তাই চায়ের ব্যবসা জমবে। সেই মতো ব্যবসা শুরু করেন। উনুন, কেটলি, চিনি, গুঁড়ো দুধের সঙ্গেই দিন কাটাতে থাকেন। শুরু হল আমদানি। কয়েকদিনের মধ্যেই লক্ষ্মীর মুখ দেখলেন। আর ৭ বছর পর? লক্ষ্মী বসত করেন তাঁর ঘরেই।
আরো পড়ুন : বিহার থেকে কোস্টারিকা, বলিউডে ঘা খেয়েও লাতিন আমেরিকায় সুপারস্টার
তিনি কোটিপতি। এখন পুনেতে তাঁর ২ টো চায়ের দোকান। ১২ জন করে কাজ করে প্রতি দোকানে। দম ফেলার ফুরসত মেলে না। বললেন, ‘এখানে জোশী ওয়াদেওলে, রোহিত ওয়াদেওলের মতো অনেক চা কোম্পানি আছে। কিন্তু আমার মতো চায়ের স্বাদ নিয়ে গবেষণা করা দোকানদার নেই।’ হ্যাঁ, চা নিয়ে রীতিমতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন নবনাথ। তারপর মিলেছে সাফল্য, ‘চা-প্রেমীদের জিভ ঠিক যেমনটা চায়, আমরা তেমনই চা বানাই। চার বছর ধরে চায়ের স্বাদ নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা চালানোর পর কাঙ্ক্ষিত স্বাদটি মিলেছে।’
আরো পড়ুন : ১৫০ টাকার মজুরিতে খেটে, আজ WBCS A গ্রেড অফিসার
আরো পড়ুন : জন্ম থেকেই বিকলাঙ্গ ও জোড়া আঙুল, পান গুমটি দোকানদারের ছেলে আজ IIT-তে সফল
আগের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেখানে জানা যায়, ভাটনগর স্টেশনের ভেতর একটি ছোট গুমটি আছে। ওই গুমটিতেই একসময় চা বিক্রি করতেন নরেন্দ্র মোদী। আর এখন তিনি ১২০ কোটি মানুষের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু শুরুটা হয়েছিল ওই গুমটি থেকেই। সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী পিটিআই-কে জানিয়েছিলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার মোদীর জন্মস্থান ভাটনগরকে বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে দিতে চায়। সাজিয়ে রাখা হবে সেই চায়ের দোকানটাও।’
নবনাথ দেশের প্রধানমন্ত্রীর উত্থানের গল্প জানেন। বললেন, ‘উনি আমাদের গর্ব। এমন পরিশ্রমী প্রধানমন্ত্রী পাওয়া ভাগ্যের।’ পরিশ্রম নবনাথও কম করেন না। প্রতি দিন দোকান পিছু ৩ থেকে চার হাজার কাপ চা বিক্রি করেন। ব্যবসা নিয়ে ভাবেন। বেকারদের কাজের সুযোগ করে দিতে চান। তাঁর কথায়, ‘আমরা আরও ১০০ টি বিপণি খোলার চিন্তা আছে। এতে অনেকেই কাজ পাবেন।’ ঠিক। কাজ পাবেন। উপার্জন হবে। বাঁচবে সংসার। হোক না চায়ের দোকান। কোনও কাজই যে ছোট নয়।
কেমন লাগলো আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন নিচে কমেন্টে জানান। অথবা আমাদের মেইল করুন contact@ichorepaka.in আর Facebook এও মেসেজ করতে পারেন।
WhatsApp এ আমাদের প্রতিটি পোস্ট সুনিশ্চিত করতে ⇒ এখানে ক্লিক করুন