বাজেটে কী কী সস্তা হল, দাম বাড়লো কিসের, দেখে নিন সম্পুর্ণ তালিকা

করোনার কামড় এখনও সামলে উঠতে পারেনি দেশ। অর্থনীতি ঘোরাতে, বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র। কর দাতাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে ২০২১ বাজেট। কিন্তু আমজনতার মাথাব্যাথা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়েই। তাই দেখে নিন কোন কোন জিনিসের দাম বাড়লো আর কোন কোন জিনিসের দম কমলো।

আজকের বাজেট পেশ নিয়ে ভারতীয়দের মনে অনেক আশা ছিল, সে আশার পূর্তি হ‌ওয়ার বদলে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কায় কেবল বৃদ্ধি পেল। দীর্ঘদিন ধরে কোভিড পরিস্থিতির কারণে দেশের অর্থনীতি একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ ভেবেছিলেন যে বর্তমান বাজেটে মধ্যবিত্তদের ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়া হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যখন বাজেট পেশ করলেন তখন দেখা গেল ছাড় তো দেওয়া হলোই না বরং বহু পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হলো।

একমাত্র প্রবীণ বয়সের মানুষেরা আয়করের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় পেলেন, তবে তাও শর্তসাপেক্ষ ভাবে।৭৫ বছরের ঊর্ধ্বে যে সকল প্রবীণের বয়স তাদের মধ্যে যারা পেনশনভোগী ওষুধের টাকায় দিন গুজরান করেন, তাদেরকেই একমাত্র আয়কর রিটার্ন ফাইল করতে হবে না। এছাড়া শেয়ার ক্ষেত্রের বিনিয়োগকারীদের থেকে টিডিএস কাটা হবেনা।পাশাপাশি গৃহঋণের ক্ষেত্র কিছু ক্ষেত্রে ছাড় মিলবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

Budget 2021

চলতি বাজেট পেশের পর দেখা গেল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিপুল টাকা খরচ করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাস্থ্য ক্ষেত্র কে ঢেলে সাজাবার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ সরবরাহ করতে ও কোষাগারের ঘাটতি মেটাতে বিভিন্ন পণ্যের উপর সেস বসানো হয়েছে।কৃষি পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস বসানো হয়েছে পেট্রোল ডিজেল মদ ও ডালের ওপর।

দেশের যে রাজ্যেগুলিতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে  তাদের মধ্যে সড়ক-পরিবহন কাঠামো জোরদার করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে সড়ক সংস্কারের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে যা দিয়ে ৬৭৫ কিলোমিটার অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করা হবে। দেশের স্বাস্থ্য খাতে ৭৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন অর্থমন্ত্রী। করোনা টিকার জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ২ লক্ষ ৮৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হল মোট স্বাস্থ্য খাতে।

আয়করের ক্ষেত্রে ৭৫ বছর বা বেশি বয়স তাঁদের সুদের উপর সম্পূর্ণ ছাড় দেওয়া হবে। জমা দিতে হবে না আয়কর রিটার্ন। পাশাপাশি গৃহঋণের সুদ ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত। এই সুবিধা মিলবে ৩১ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত। আমদানি শুল্ক অনেকটাই বৃদ্ধি করা হচ্ছে বিভিন্ন পণ্যে। অর্থমন্ত্রীর কথায় এর ফলে লাভবান হবে দেশ। কাঁচামালের উপর কাস্টম ডিউটি কমানো হচ্ছে।

মোবাইল ও চার্জারে ২.৫ শতাংশ এক্সপোর্ট চার্জ ধার্য করা হয়েছে। আয়রন-স্টেনসেল স্টিলের উপর আমদানি শুল্ক বাড়ানো হল। নাইলন ফাইবারের উপর, কেমিকেল শিল্প ও নাফতার উপর থেকে আমদানি শুল্ক কমানো হচ্ছে। প্রতি লিটার ডিজেলের উপর সেস ৪ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি লিটার পেট্রোল এ সেস বৃদ্ধি পেয়েছে ২.৫ টাকা। এই বৃদ্ধির ফলে পেট্রোপণ্যের দাম বাড়বে আর তার ফলস্বরূপ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর উপর ও দাম বাড়ার মত একটি আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

২০২১ বাজেটে দাম বাড়লো

১. বিদেশী মোবাইল ফোন, ২. বিদেশী যন্ত্রাংশ, ৩. সোলার ইনভারটার ও সোলার সেলের ৪. ফ্রিজ, ৫. টিভি, ৬. মোবাইল ফোনের চার্জার, ৭. আমদানি করা রত্ন ও বহু মূল্যবান পাথর। ৮॰ তামার উৎপাদে ৯. পেট্রল-ডিজেল, ১০॰ মদ, ১১॰ মুসুর-ছোলার ডাল, ১২॰ ভোজ্য তেল, ১৩॰ আপেল, ১৪॰ বিদেশি তুলো, ১৫॰ রাসায়নিক, ১৬॰ সোনা-রুপো, ১৭॰ গাড়ির যন্ত্রাংশ।

২০২১ বাজেটে দাম কমলো

১. নাইলনের কাপড়, ২. লোহার তৈরি আসবাবপত্র, ৩. স্টিলের এবং স্টেইনলেস স্টিলের আসবাবপত্র, ৪. সোনা-রূপো, ৫. চামড়ার আসবাবপত্র, ৬॰ লোহা, তামা, কাঁসা, সার, শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল