মাধ্যমিকের ও উচ্চ মাধ্যমিকের পর কি নিয়ে পড়লে চাকরি পাবো ?

প্রায় দুই সপ্তাহের মতো হল প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিকের ফলাফল। অনেকেরই এসেছে ভালো ফল, নজরকাড়া। আর তাই এবারের লক্ষ্য পরের ধাপ উচ্চ মাধ্যমিক। ভালো ফল হয়ে ছেলেমেয়ে ও তাদের পরিবারের যে আনন্দ হয়েছে, তাতে আবার দেখাও দিয়েছে দুশ্চিন্তা। এখন তো ছেলেকে বা মেয়েকে তাদের পছন্দের শাখা বেছে নিতে হবে। কারণ এই পছন্দের শাখা তাকে ভবিষ্যতে সেরা কেরিয়ার অপশন খুঁজে নিতে সাহায্য করবে। আর তাই অনেক বাবা মায়েরা যদিও ভাবছেন তাদের ছেলে মেয়েরা মাধ্যমিকে ভালোভাবে সফল হয়েছেন বলে উচ্চ মাধ্যমিকেও সফল হবে তা কিন্তু তাদের ভুল ধারনা। সফলতা পেতে গেলে নির্বাচন করতে হবে ভালো বিষয়। বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে অনেকেরই আছে বদ্ধমূল ধারণা যে এই বিষয় নিয়ে পড়লেই জীবনে আসে সাফল্য। আর তাই ছেলেমেয়ের ভালোবাসার বিষয় না দেখেই একপ্রকার জোর করেই তাকে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি করে দিয়ে থাকি।

আর তারফলে বিষয়কে না ভালোবেসে একপ্রকার জোর করেই তাদের টানতে হয়। যার চরম পরিণতি হয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বেরোনোর পর। তাই প্রথমেই বলে রাখি নিজেদের ছেলে মেয়েকে বিজ্ঞান বিষয় নিয়েই পড়তে হবে এমন কিন্তু চাপ দেবেন না।মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বা গণিত আর উচ্চ মাধ্যমিকের  বিজ্ঞান বা গণিতের সিলেবাস কিন্তু একরকম নয়। তাদের মধ্যে নদী আর সমুদ্রের পার্থক্য।তবে বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়লে যে অনেক  কিছু করার সুযোগ পাওয়া যায়, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু বিজ্ঞান ছাড়া জীবন যে অন্ধকার তা কিন্তু একদমই নয়। প্রত্যেক বিষয়ের আছে তাদের পরিধি। আসলে আমাদের সেই সব বিষয় নিয়ে সম্যক জ্ঞান না থাকার জন্য আমরা এরকম কথা বলে থাকি। আমাদের রাজ্যে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে যে যে বিষয়গুলি পড়ানো হয় তাতে যেমন আছে অনেক চিরাচরিত বিষয়, যেমন গণিত, পদার্থ বিদ্যা, রসায়ন, ইতিহাস, ভূগোল, সংস্কৃত আবার তেমনই আছে বেশ কিছু নূতন বিষয় যেমন পুষ্টি বিজ্ঞান, পরিবেশ বিদ্যা, সমাজ বিদ্যা আরও অনেক কিছুই।আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয় হল উচ্চ মাধ্যমিক বা  তার পরবর্তী স্তরে নীচের বর্ণিত বিষয়গুলি রেখে যদি পড়াশোনা করা যায় তাহলে ভবিষ্যতে আমরা কাজের কেমন সুযোগ পাবো।আর এইসব বিষয় গুলো কোথায় ভালো করে পড়ানো হয় ,এইসব কিছু নিয়েই।

আপনার পছন্দের বিষয় যদি হয় গণিত

রাজ্য জুড়েই যেসব উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো আছে, আর যেখানে বিজ্ঞান শাখা পড়ানো হয়, সেখানেই এই বিষয় পাবেন।উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বিষয়ে ভালো রেজাল্ট করতে হলে আপনাকে অবশ্যই গণিতে ভালো ফল করতে হবে।আর তাই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ভালো করে দক্ষতা অর্জন করার জন্য চাই ভালো অনুশীলন এবং বিষয়ের উপর দক্ষতা।অর্থাৎ পাঠ্য বিষয়ের অন্তর্গত পাঠ বুঝতে হবে ভালো করে।আর তাই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাশাপাশি গৃহশিক্ষক বা কোচিং ক্লাসের ব্যবস্থা থাকলে সুবিধা হয়।গণিত বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলে পরবর্তীতে কলেজে গণিতে অনার্স বা সাম্মানিক করা যায় যা এখনও সবচেয়ে কদর আছে।এছাড়াও ইঞ্জিনিয়ারিং এর যেকোন শাখায় অবশ্যই থাকবে গণিত।তাই গণিতের  ভবিষ্যৎ ক্ষেত্র অনেক বড়ো।পরিসংখ্যান নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য আপনি ইন্ডিয়ান স্টাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হতে পারেন।এখানে ভর্তি হলে নির্দিষ্ট স্টাইফেন্ডও পাবেন।অর্থাৎ গণিত বিষয় থাকলে আপনি যেমন একদিকে  হতে পারবেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক তেমনি কলেজের প্রফেসর হতেও পারেন।এছাড়াও বিজ্ঞানের প্রায় প্রতিটি শাখায় গণিত থাকবেই ডাক্তারি ছাড়া।তাই ভালো ভাবে গণিতের উপর অনুশীলন বা ভালো লাগা প্রথম থেকেই দরকার।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা, ব্যাংক, করপোরেট অফিসগুলোতেও গণিতবিদ লাগেই।এছাড়াও আপনার কাছে থাকছে গবেষনা করার সুযোগ।অর্থাৎ আপনার সুন্দর ভবিষ্যৎ আর স্বপ্নের কেরিয়ার থেকে কেউ আপনাকে আটকাতে পারবে না।

আপনার পছন্দের বিষয় যদি হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান

এবারে আসি একটি কলা বিভাগের বিষয়ের উপর।উচ্চ মাধ্যমিকে যারা কলা বিষয়ে ভর্তি হবেন বা হয়েছিলেন তাদের বিষয়গুলির মধ্যে একটি হল রাষ্ট্র বিজ্ঞান।অনেকেই মনে করেন রাষ্ট্র বিজ্ঞান নিয়ে নাকি যারা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত হতে চান তারাই পড়াশোনা করেন।অর্থাৎ রাষ্ট্রবিজ্ঞান শুধুমাত্র  মুষ্টিমেয় কয়েক জনের বিষয়।কিন্তু এটা একদমই নয়।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান যেহেতু মাধ্যমিক স্তরে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় না, তাই অনেকেই বলেন, ‘ওটা তো আর মাধ্যমিক স্তরের সাবজেক্ট নয়!’ এখন কারও জীবনের লক্ষ্য যদি হয় পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষক হওয়া, তাঁর রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহ  না রাখাই উচিত। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অবশ্যই আছে শিক্ষকতার সুযোগ। আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে যদি কেউ শুধু রাষ্ট্রবিজ্ঞান চর্চা করে, জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়া থেকে তাকে কেউ আটকাতে পারবে না।
প্রথমত, অ্যাকাডেমিক লাইন অনুযায়ীই আপনি যদি এগিয়ে যান তাহলে পাবেন অনেক সুযোগ।উচ্চ মাধ্যমিকের পর স্নাতক করে তারপর স্নাতকোত্তর স্তরে ৫৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করে থাকলে পাবেন  নেট বা সেট পাশ করলে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর সুযোগ পাওয়া যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত,কেউ যদি শুধুমাত্র গবেষণা করতে চান তাহলে ইউ জি সি-র ফেলোশিপ নিয়ে যে-কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে পারেন। সাধারণত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়কে রাজনৈতিক দর্শন, তুলনামূলক রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এই তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হলেও, জনসাধারণ, সমাজতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, মানবাধিকার, লিঙ্গবৈষম্য বা সেফোলজি-র মতো বিষয় চর্চার মাধ্যমে কাজের অনেক সুযোগ পাওয়া যায়।
তৃতীয়ত রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়লে ভবিষ্যতে সাংবাদিকও হতে পারেন মাস কমিউনকেশন নিয়ে স্নাতক স্তরে বা স্নাতকোত্তর করার পর । সংবাদপত্র বা বৈদ্যুতিন গণমাধ্যমে প্রতিদিন যেসব রাজনৈতিক সম্পাদকীয় বা লাইভ তর্ক বিতর্ক  সভায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকের ভূমিকাও পালন করতে পারেন।
চতুর্থত রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়লে ভবিষ্যতে আইন নিয়েও পড়াশোনায় সফল হতে পারেন। পৃথিবী জুড়ে প্রসিদ্ধ আইনজ্ঞরা ,বেশিরভাগই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র । আর তাই উচ্চ মাধ্যমিকের পর সরাসরি আইন নিয়ে পড়ার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ থাকলে সুবিধা অনেক।
এ ছাড়াও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পড়ুয়ারা মানবাধিকার কর্মী হিসাবে বিভিন্ন এনজিওতে যোগদান করতে পারেন ।তাছাড়া রাজ্য বা সর্বভারতীয় যেমন পি এস সি বা ইউ পি এস সি প্রভৃতি প্রশাসনিক পরীক্ষা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পড়ুয়ারা সবসময় ভালো ফল করেন।

উচ্চ মাধ্যমিকে বা কলেজে যদি বিষয় হয় রসায়ন

উচ্চ মাধ্যমিকের পর তোমার পছন্দ যদি হয় রসায়ন, তাহলে তৈরি হও মাধ্যমিক  থেকেই। কারণ, রসায়নে পড়তে হয় বিভিন্ন রকমের পদার্থ, তাদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম, তারা কী ভাবে একে অপরের সঙ্গে মিশে এক বা একাধিক নতুন পদার্থ তৈরি করে, নতুন  পদার্থটির ধর্ম কী ইত্যাদি।একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া কী ভাবে সংঘটিত হবে, পর্যায় সারণিতে কোন মৌলের অবস্থান কোথায়, তাদের ধর্ম, মৌলগুলির আন্তঃসম্পর্ক রসায়ন শাস্ত্রের এই ধাপগুলি সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে প্রথম থেকেই।আসলে আমরা যদি দেখি আমাদের ব্যবহৃত প্রায় সকল জিনিস যা আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যবহার করি যেমন  টুথপেস্ট , খাবারদাবার বা কোনও জীবনদায়ী ওষুধ। এই সব জিনিসের উৎপত্তি রসায়নাগারে বা রাসায়নিক শিল্পকারখানায়। এক জন দক্ষ রসায়নবিদ ছাড়া তো এ কাজ আর কেউ করতে পারে না।রসায়নের নানান শাখায় রসায়ন ছড়িয়ে  পড়েছে যেমন জৈব,অজৈব ,প্রানী রসায়ন, আরও অনেক।উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে রসায়ন নিয়ে ভালো রেজাল্ট করলে ভবিষ্যতে স্নাতক স্তরে রসায়ন নিয়ে পড়ে যেমন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে পারবেন তেমনি উচ্চ শিক্ষা বা গবেষণা করে নানা ক্ষেত্রে যেমন ওষুধ তৈরির ক্ষেত্র থেকে সকল ক্ষেত্রেই কাজের সুযোগ অনেক।এ ছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিভিন্ন শাখায় গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে ছেলেমেয়েদের কাছে।এছাড়াও ধাতু বিদ্যা বিষয়ে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়।এছাড়াও ধাতু শিল্প সংক্রান্ত নানান ক্ষেত্রে ,বিভিন্ন সংকর ধাতু  কলকারখানায় কাজ অনেক পাবেন। শিক্ষকতা বা অধ্যাপনার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সংস্থাতেও রসায়নের ছাত্রছাত্রীদের কাজের সুযোগ আছে।

উচ্চমাধ্যমিকের পর বিষয় যদি হয় ইংরেজি

উচ্চমাধ্যমিকে সবার আবশ্যিক বিষয় হল ইংরেজি। অনেকেই স্নাতকস্তরে ভালোবেসে এই বিষয়টিকে বেছে নেন।  একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ইংরেজি বলতে যে ধরনের পড়াশোনা ছেলেমেয়েরা করে আসে, স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরের ইংরেজি তার থেকে অনেকটাই আলাদা। তাই যদি তোমার ভাল লাগে তবেই স্নাতক স্তরে পড়া উচিত। প্রত্যেক ভাষারই নিজস্ব একটা সৌন্দর্য থাকে ,ইংরেজিরও তাই। তবে যারা ইংরেজিকে ভালবেসে পড়তে চাই, জানতে চাই নতুন বিষয়কে ,বিদেশি এই ভাষাকে জানতে গেলে ,দক্ষতা অর্জন করতে হলে চাইলে অধ্যবসায় করতে হবে।

ইংরেজি নিয়ে পড়লে সাধারণভাবে বিদ্যালয় বা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার সুযোগ পাওয়া যায় সহজেই স্নাতক করার পর বি এড করলে।এছাড়াও স্নাতকোত্তর স্তরের পর নেট দিয়ে কলেজে অধ্যয়ন করার সুযোগ পাওয়া যায়।এছাড়াও সাংবাদিকতা, সংবাদপাঠ, সঞ্চালনা, সম্পাদনা, জনসংযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলিতে ইংরেজির স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ছেলেমেয়েদের প্রচুর কাজের সুযোগ। ইংরেজির কমিউনিকেশন ল্যাংগুয়েজ হওয়ায় কর্পোরেট কমিউনিকেশন, বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থায় ইংরেজির প্রয়োগ শিক্ষণ, বাণিজ্যিক সংস্থায় কনটেন্ট রাইটিং বা ইংরেজি জানা লোকদের জন্য সিনেমার পরিচালনা, সম্পাদনা, সিনেমাটোগ্রাফি, স্ক্রিপ্ট লিখন, অভিনয়, ফিল্ম রিভিউ, গ্রাফিক ডিজাইন, ফ্যাশন শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রেকাজের সুযোগ অনেক আছে।এ ছাড়া বিজ্ঞাপন জগৎ, বিপিও, এনজিও সংস্থা ইত্যাদিতেও  সুযোগ রয়েছে। লাইব্রেরি সায়েন্স এবং অ্যাপ্লায়েড আর্টসের সাথে সাথে  রাজ্য বা জাতীয় স্তরে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হওয়ার সুযোগ বেশি থাকে।তাছাড়া ইংরেজি সাহিত্যে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা তো আছেই। গবেষণার নানান বিষয় যেমন ইংরেজি সাহিত্য থেকে শুরু করে অন্যান্য ভাষার সাহিত্য, ভাষাতত্ত্ব, নিউরো লিঙ্গুয়িস্টিক্স, আর্ট এবং আর্কিটেকচার, জেন্ডার, শিশুসাহিত্য, কল্পসাহিত্য, থিয়োলজি, দলিত সাহিত্য, কালচার স্টাডি ইত্যাদি।

উচ্চ মাধ্যমিকের পর যদি পড়তে চাও আইন

আমাদের রাজ্যে তথা গোটা দেশেই দুই ভাবে আইন পড়া যায়।এক পাঁচ বছরের জন্য যা উচ্চ মাধ্যমিকের পর করা যায় ।আর আরেকটি হল তিন বছরের পাঠ্যক্রম যা গ্র্যাজুয়েশনের পর  করা যায়। রাজ্যে অনেক বিশ্ব বিদ্যালয় যেমন বর্ধমান,বিদ্যাসাগর,ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়  কলকাতা এবং কল্যাণী অধীনস্থ অনেক কলেজে স্নাতক স্তরে আইন পড়ানো হয়। দু’বছরের এল এল এম কোর্স করা যায় কলকাতা, বর্ধমান, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জুরিডিকাল সায়েন্সে এবং হলদিয়া ল কলেজে। আইন পড়ার সময় কিছু কিছু শাখায়  যেমন  ক্রিমিনাল ল এবং বিজনেস ল-এর যে কোনও একটিতে স্পেশালাইজেশন করা যায় রাজ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে।তবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এল এল বি এবং এল এল এম পড়ার জন্য অ্যাডমিশন টেস্ট হয়। আইন নিয়ে উচ্চশিক্ষা করার ক্ষেত্রে হায়দরাবাদের নালসার, যোধপুর ল স্কুল, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান। এল এল এম করে পিএইচ ডি করা যায় আইন বিশ্ববিদ্যালয়েই।

যদি ভালোবাসো এনিমেশন বা গেমস  বা কার্টুন

বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে মোবাইলে গেম খেলতে ভালোবাসেন না এমন টিনেজদের সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে।আর তুমি যদি চাও নিজে গেম বানাবে তাহলে গেম ডেভেলপমেন্ট-এর বিভিন্ন ধরনের কোর্স রয়েছে, যেমন ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট ইত্যাদি। কলকাতার এরিনা মাল্টিমিডিয়া (www.arena-multimedia.com)-য় গেম আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন-এর ১৫ মাসের একটি কোর্স করানো হয়। এছাড়াও বেঙ্গালুরুর ইমেজ কলেজ অব আর্টস, অ্যানিমেশন অ্যান্ড টেকনলজি (http://www.icat.ac.in/courses-b-a-game-development-content.asp)-তে ৩ বছরের বিএ ডিগ্রির  কোর্স ছাড়াও ১ বছরের ডিপ্লোমা কোর্স পড়ানো হয়। তাছাড়াও পিকাসো অ্যানিমেশন কলেজ(HTTP://WWW.PICASSO.CO.IN)-এর পিকাসো গেম অ্যান্ড আর্ট প্রোগ্রাম-এর একটি ১ বছরের সার্টিফিকেট কোর্স করানো হয়, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেই এই কোর্সটি করা যায়। পুণের মায়া অ্যাকাডেমি অব অ্যাডভান্সড সিনেমাটিক্স বা ম্যাক (HTTP://WWW.MAACPUNE.COM)-এ গেম ডিজাইন অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশনের একটি ১ বছরের সার্টিফিকেট কোর্স করানো হয়।  অ্যানিটুপিক্স (www.ani2pix.com)-এ ১ বছরের গেম ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের কোর্স রয়েছে। এ ছাড়া, ভারচুয়াল ইনফোকম (www.virtualinfocom.com)-এ ১ বছরের গেম প্রোগ্রামিং কোর্স করানো হয়। এই কোর্সের পর গেম ডেভেলপার বা গেমিং আর্টিস্ট হিসেবে ম্যানুয়াল বা ডিজিটাল দু’ধরনের কাজই পাওয়া যায়।

পছন্দের বিষয় যদি হয় পুষ্টি বিজ্ঞান

পুষ্টি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করলে  বর্তমানে কাজের সুযোগ অনেক।পুষ্টিবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক করলে যেমন পুষ্টিবিদ বা ডায়েটিশিয়ান হওয়া যায় ,তেমনি হাসপাতালে পুষ্টিবিদ বা রোগীদের খাবার কেমন হবে তা নিয়েও চাকরি পাওয়া যায়। বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্কুল-কলেজে নিউট্রিশনিস্টের পোস্ট রয়েছে। এছাড়াও বড় বড় ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি, ন্যাশনাল-মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি, পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট, ফিটনেস সেন্টার,  আন্তর্জাতিক বিভিন্ন এনজিও, বড় বড় রেস্তোরাঁ, ক্যাটারিং সংস্থা প্রভৃতি ক্ষেত্রে কাজের জায়গা রয়েছে। সঙ্গে হতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার, মেডিকেল রিসার্চার, এক্সারসাইজ ফিজিওলজিস্ট, ফুড সায়েন্স রিসার্চার, হোম ইকোনমিস্ট ইত্যাদি ।অর্থাৎ সরকারি ,বেসরকারি সকল ক্ষেত্রেই রয়েছে কাজের ভালো সুযোগ।আমাদের দেশে এমনকি সারা বিশ্বেই নিউট্রিশনাল সায়েন্সে ডিগ্রিধারীদের চাহিদা রয়েছে। ডায়েটেশিয়ান এবং নিউট্রিশনিস্টদের চাহিদা বর্তমান যুগে বেশ উঁচু। এছাড়াও  পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করে চাকরির বাজারে বিভিন্ন পেশায় বেশ মোটা অঙ্কের বেতন পেতে পারেন।