ভাত খাওয়ার উপকারিতা কী? ভাত খেলে ওজন বাড়ে? চিকিত্‍সকরা কী বলছেন

কথায় বলে মাছে ভাতে বাঙালি। ভাত না খেলে তাই বাঙালির চলে না। অনেকের আবার দিনে দুবেলা ভাত চাই ই চাই। তবে ভাত খেলে যে চিন্তাটা সবার আগে মাথায় আসে সেটা হল ভাত খেলে ওজন বাড়ে।

সত্যিই কি ভাত খেলে ওজন বাড়ে? ভাত খাওয়ার সঙ্গে আসলে কি ওজনের কোনো সম্পর্ক আছে? আসুন দেখা যাক কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভাত খেলে কী ওজন বাড়ে?

ডাল, সবজি, মাছ, ডিম, মাংস দিয়ে ভাত খেলে শরীরে যথাযথ পুষ্টি হয় এবং ক্যালোরির পরিমাণও ঠিক থাকে। তবে ভাতের পরিমাণ হবে অল্প এবং অন্যান্য শাকসবজির পরিমাণ হতে হবে বেশি।

   

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন পরিমাপ মত ভাত খেলে কখনো ওজন বাড়ে না বরং উচ্চ রক্তচাপ ও মেটাবলিক সিনড্রোম কমে যায়। সারা দিনে ১৫০ গ্রাম ভাত খেলে দেহে ৫০০ ক্যালোরি পৌঁছায়।

ভাত খেয়ে কীভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?

প্রথমত ভাতের পরিমাণ কমাতে হবে। এক কাপ কিংবা দেড় কাপ-এর বেশী ভাত খাওয়া যাবে না। যতটা ভাত খাবেন, ঠিক সমপরিমাণ কাঁচা সবজির সালাদ খেতে হবে।

এই সালাদে থাকতে পারে শসা, টমেটো, বাঁধাকপি, গাজর ইত্যাদি। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে ভাত দিয়ে তরকারি নয়, তরকারি দিয়ে ভাত খেতে হবে।

ধীরে ধীরে ভাতের পরিমাণ কমাতে হবে এবং সবজির পরিমাণ বাড়াতে হবে। দুই কাপ ভাত থেকে দেড় কাপ এবং এরপর এক কাপ, এ রকম গণ্ডির মধ্যে বেঁধে ফেললে দেখবেন, ওজন আর বাড়ছে না।

ভাত খাওয়ার পরপরই বিছানায় যাওয়া যাবে না। হোক সেটা দুপুর হোক বা রাত। ভাত খাওয়ার আধা ঘণ্টা পর ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করে নিতে হবে।

ভাত খাওয়ার উপকারিতা কী কী?

ভাতের মধ্যে রয়েছে স্টার্চ ও ফাইবার যা দেহের ওজন, সুগার ও রক্তচাপ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ভাত হজম হয় সহজেই। তাই শরীর খারাপ হলেও ডাক্তাররা ভাত খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ভাত অনেক সময় ধরে হজম হয়। ফলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। ভাত খেলে সেরেটোনিন নামে হরমোন ক্ষরণ হয়, যার কারণে খিদে মিটে যায়।

ভাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে, যা দেহের ইমিউনিটি সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।

ভাত রান্নার সঠিক পদ্ধতি কী?

ভাতের চাল বেশি ধুলে ভিটামিন বি জলের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। তাই বেশি চাল ধোওয়া উচিত না।

চাল ভিজিয়ে রেখে যদি ওই জলেই কম আঁচে ঢ়াকা দিয়ে রান্না করা হয় তাহলে ফ্যান ফেলতে না হয়। ফলে ভিটামিন–মিনারেলরা ভাতের মধ্যেই থাকবে।

ওজন কমাতে হলে ভাতকে ভাপে রেখে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আনুন। এর ফলে ভাতের  মধ্যে থাকা স্টার্চ রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চে পরিণত হয় ও সেই ভাত খেলে অল্পেই পেট ভরে যায় বলে ওজন কমার সুরাহা হয়।