মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশী (Bangladesh) অভিনেত্রী পরীমনি (Porimoni)। তাকে কেন্দ্র করে জল্পনার পারদ ক্রমশ চড়ছে। যত দিন যাচ্ছে, পুলিশের তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ১ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জেলেই রয়েছেন পরী। তার আইনজীবী অবশ্য তার জামিনের জন্য জোরদার প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তবে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে দিয়েছে। এই একই মামলায় অভিযুক্ত পরীমনির সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুও জামিন পাননি।
পরীমনির মামলাটি আদালতে উঠলে পুলিশের বিরুদ্ধে পরীমনির উপর মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ তুলেছিলেন তার পক্ষের আইনজীবী। আদালতে জানানো হয়েছিল যে, ‘ভার্টিগো’ এবং ‘প্যানিক অ্যাটাক’ এর রোগী পরীমনি। পুলিশি হেফাজতে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই জরুরি চিকিৎসাস্বার্থে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল।
এদিকে এই মামলার তদন্ত পরিদর্শক তথা সিআইডি কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফার আবেদন ছিল এই যে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরীমনিকে হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হোক। আদালত শেষমেষ পরীমনির বিপক্ষেই রায় দিয়েছে। ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডলের নির্দেশে আপাতত পরীমনির ঠাঁই হয়েছে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের রজনীগন্ধা কোয়ারেন্টাইনে। প্রসঙ্গত, ঢালিউডের ওপর আরেক মডেল অভিনেত্রী মৌ এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১লা আগস্ট রাতে মৌয়ের মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মদ, ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৩ দফায় মোট ৮ দিন পুলিশি হেফাজতে রেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। মোহাম্মদপুর থানায় মৌয়ের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলাটি উঠলে সেই আবেদনও নামঞ্জুর করে দেন মহানগর হাকিম আবু সাঈদ। এরপর তাকে পাঠানো হয় রজনীগন্ধা ভবনের কোয়ারেন্টিনে।
আদালতের শুনানির পর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ তাকে ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে পরীমনিকো। পরীমনিকে দেখার জন্য তখন উৎসাহিত জনতার ভিড় দেখা যাচ্ছিল জেলের বাইরে। প্রসঙ্গত, জেল হেফাজতের পুলিশি জেরার পরেও আপাতত পরিমনির থেকে বিশেষ কোনও তথ্য মেলেনি বলেই জানিয়েছে পুলিশ। জেলে যাওয়ার পর থেকেই কেমন যেন চুপচাপ হয়ে গিয়েছেন অভিনেত্রী।
জেল হেফাজতে তেমন কোনও অস্বাভাবিক আচরণ না করলেও অধিকাংশ সময়ে চুপ করে কি যেন ভেবেই চলেছেন পরীমনি। তিনি আপাতত অন্যান্য মহিলা বন্দীদের মতোই সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছেন। জেলের অন্যান্য আসামিদের জন্য যে খাবারের বন্দোবস্ত আছে, তাই দেওয়া হচ্ছে পরীমনিকে। তবে আপাতত করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে তাকে নতুন বন্দী হিসেবে বিবেচনা করে আলাদা একটি সেলে রাখা হয়েছে।
কাশিমপুর মহিলা কারাগারের সিনিয়র সুপার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জানিয়েছেন, “মহামারিকালের স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী তাদের সেখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন করতে হবে। এর মধ্যে তাদের করোনার লক্ষণ দেখা না দিলে পরে তাদের সাধারণ বন্দিদের ভবনে পাঠানো হবে।” জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, যেহেতু পরীমনি ডিভিশনপ্রাপ্ত হননি, তাই কোয়ারেন্টিন সময় পার হওয়ার পর তাকে অন্য বিচারধীন সাধারণ বন্দিদের সঙ্গেই রাখা হবে।