কৃত্রিম কিডনি বানিয়ে বিশ্বকে চমকে দিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর রোগের ডিপো। বারোটা বাজছে হার্ট, ফুসফুস, লিভার, কিডনির। ক্রনিক হচ্ছে কিডনির রোগ। এসব সমস্যার সমাধানই হলো কিডনি প্রতিস্থাপন। আর এই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই সানফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো-ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর শুভ রায় গত ৭ বছরের চেষ্টায় শেষমেশ কৃত্রিম কিডনি বানিয়ে ফেললেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হওয়া এই নকল কিডনি একাধিক পরীক্ষায় ইতিমধ্যেই পাশ করেছে। আমেরিকায় শতাধিক রোগীর শরীরে এই কিডনি ব্যবহার করে সুফল পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন নকল কিডনির অন্যতম যৌথ আবিষ্কারক শুভ্র রায়। তিনি জানিয়েছেন, এখন এই কৃত্রিম কিডনি আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ছাড়পত্র পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে হাতের মুঠোর মাপের এই কিডনি আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই বাজারে চলে আসতে পারে।

আর বছর দু’-তিনেকের মধ্যেই আমেরিকার বাজারে বাণিজ্যিক ভাবে এসে যাবে ওই কৃত্রিম কিডনি। আকারে হাতের মুঠোর সমান। খরচ তুলনায়ও অনেকটাই কম। ২০১৯-এর মধ্যেই বাজারে আসার সম্ভাবনা এই কৃত্রিম কিডনির।

কিডনি সমস্যায় প্রতি বছর অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়। কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচও অনেক।  কৃত্রিম কিডনির সঠিক খরচের হিসাব এখনই না বললেও শুভ রায়ের দাবি, ডায়ালাইসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপনের চেয়ে অনেক কম খরচে বসানো যাবে কৃত্রিম কিডনি।

স্বাভাবিক কিডনির মতো রক্ত শোধন করা ছাড়াও হরমোন উৎপাদন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম এই কৃত্রিম কিডনি। রক্ত থেকে বিষাক্ত বর্জ্য বাদ দেওয়া ছাড়াও রক্ত শোধনের কাজ নিখুঁতভাবে করতে পারে এই  কৃত্রিম কিডনি। ইউরোপ সহ বিশ্ব বাজারেও সেই কৃত্রিম কিডনি আসতে দেরি হবে না।

১০ বছর আগে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ জন সহকর্মীকে নিয়ে কৃত্রিম কিডনি তৈরির কাজ শুরু করেন তারা। এই প্রকল্প সফল হলে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় কিডনির চাহিদা অনেকটাই পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে এই আবিষ্কারের কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছেন তিনি। তিনি আশা করছেন, কয়েক বছরের মধ্যে এই কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হবে। তবে এ জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি দরকার। আপাতত সেই অনুমতির অপেক্ষায় আছে শুভ রায়ের দল।

আরও পড়ুন ঃ ভারতের সেরা ১৩ টি হাসপাতাল, সুখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য

আরও পড়ুন ঃ কিডনি ভালো রাখার ৭ টি সহজ উপায়

কিডনি সমস্যায় ভারতে প্রতি বছর প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডায়াবিটিস এবং হাই ব্লাড প্রেশারই তার অন্যতম কারণ। ২০১২ থেকে ২০১৬-র মধ্যে তামিলনাড়ুতে ২ লক্ষ ২১ হাজারের বেশি মানুষের ডায়ালিসিস করাতে খরচ হয়েছে ১৬৯ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা। ডায়ালিসিস ছাড়াও ৬০ হাজারের বেশি মানুষ কিডনিতে পাথর এবং মূত্রাশয়ের চিকিত্সা করিয়েছেন। কৃত্রিম কিডনির সঠিক খরচের হিসাব এখনই না বললেও শুভ রায়ের দাবি, ডায়ালিসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপনের চেয়ে অনেক কম খরচে বসানো যাবে কৃত্রিম কিডনি।