নেপোটিজম প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অঞ্জন চৌধুরীর মেয়ে রিনা চৌধুরী

সময়টা তখন ৮০-৯০ এর দশক। পরিবারকেন্দ্রিক একের পর এক ছবি নিয়ে কাজ করছেন অঞ্জন চৌধুরী (Anjan Chowdhury)। ‘ছোট বউ’, ‘মেজ বউ’, ‘বড় বউ’ থেকে শুরু করে ‘গুরুদক্ষিণা’, ‘শত্রু’, ‘প্রতিবাদ’, একের পর এক সুপারহিট সিনেমা দিয়ে টলিউডকে (Tollywood) এগিয়ে নিয়ে যেতে তার ভূমিকাই ছিল বেশি। তার হাত ধরেই একাধিক নামিদামি তারকা পেয়েছে টলিউড। তিনি তার দুই কন্যা রিনা চৌধুরী (Rina Chowdhury) এবং চুমকি চৌধুরীকেও (Chumki Chowdhury) তারকা হিসেবে তুলে ধরেছেন। তবে এখন আর তাদের সেভাবে ক্যামেরার সামনে পাওয়া যায় না। চুমকি চৌধুরীকে আজও টেলিভিশন ধারাবাহিকে দেখা গেলেও রিনা একেবারেই অভিনয় থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছেন।

এখন পুরোদস্তুর পরিচালনার কাজে মন দিয়েছেন রিনা। তবে ফেলে আসা দিনগুলি তাকে আজও ভাবায়। যুগ বদলেছে, সময় পেরিয়েছে। অঞ্জন চৌধুরী বহু বছর আগেই পরলোকগমন করেছেন। পুরনো দিন, শুটিং ফ্লোর, নামিদামি তারকাদের মাঝে অভিনয়, শুটিংয়ের ফাঁকে আড্ডা, সেই সবদিনের কথা ভাবলে নস্টালজিক হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। নেপোটিজম নিয়ে আজ টলিউডের দিকেও অনেক আঙ্গুল ওঠে। তবে রিনার কথায় তার বাবা কখনও নেপোটিজম সমর্থন করেননি।

Here is why Chumki Chowdhury Left Tollywood Industry

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে অভিনেত্রী বলেন, “অনেকেই বলেন, বাবা ছিল বলেই আমরা সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু নেপোটিজম বিষয়টাই যুক্তিযুক্ত নয়। তাই যদি হত, তাহলে আমরা থাকাকালীনও বাবা অন্য কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রীকে সিনেমায় কাস্ট করতেন না কিংবা সুযোগও দিতেন না। উনি তো নিজে হাতে কতজনের কেরিয়ার গড়েছেন। স্টারকিডরা এমনিতেই প্রচারের আলোয় থাকে। এই তো শুভশ্রীর সন্তান ইউভানকেই ধরুন। ওকে নিয়ে অনুরাগীদের মধ্যে কত উন্মাদনা। আমাদের সময়েও সেটাই কাজে লেগেছিল।”

তিনি আরও বলেন, অঞ্জন চৌধুরির দুই মেয়ে সিনেমা করছেন এটা শুনেই অনেকে ছবি দেখতে গিয়েছেন। আমাদের পরিবারে নেপোটিজম বিষয়টাই ছিল না। এখনও নেই। ভাই সন্দীপ চৌধুরিও তো অনেক সিরিয়াল পরিচালনা করছে, সেরকমই যদি হত তাহলে তো ভাইও আমাদের কাস্ট করতে পারত!” তাদের দুই বোনের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির নায়ক-নায়িকাদের সম্পর্ক ছিল খুব ভাল। বিশেষত প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তাপস পালরা ছিলেন তাদের দাদার মত। রঞ্জিত মল্লিক তাদের কাছে ‘রঞ্জিতকাকু’, খুব ছোট বয়স থেকেই তার সঙ্গে আলাপ।

Chumki Chowdhury

রিনার কথায়, “বুম্বাদা, তাপসদা যদি একসঙ্গে গল্প করত, আমাদের ঘর থেকে বের করে দিত। বলত এই যা তো, তোদের এসব কথা শুনতে হবে না।” পুরনো দিনের কথা মনে করে তিনি বলেন, “এরকমও হয়েছে যে আমি বুম্বাদার খাটে শুয়ে জিতেন্দ্রর সিনেমা দেখছি, আর ও মেঝেতে বসে চেঁচাচ্ছে বুকাই সর আমাকে দেখতে দে! ভিসিআর-টা কি আমি তোর জন্য ভাড়া করে এনেছি?”

অভিনয় এবং পরিচালনা নিয়েই মেতে রয়েছেন দুই বোন। ইন্ডাস্ট্রিতে তারকারা রাজনীতির দিকে ঝুঁকছেন। এমন প্রস্তাব তাদের কাছেও এসেছিল। কিন্তু তারা রাজনীতিতে আসতে চাননি। চুমকির কথায়, “আমার কাছে বড় বড় জায়গা থেকেও প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু আমি না করে দিয়েছি। কোনওদিন কোনও দলের হয়ে প্রচারে নামিনি। নামবও না।” দিদির কথাতে সায় দেন রিনাও।