বলিউডে যেমন ‘গব্বর সিং’, টলিউডে (Tollywood) তেমনই ‘বিন্দু মাসি’! ভয়ঙ্কর খল নায়িকার চরিত্রে অনামিকা সাহা ছাড়া আর কাকেই বা মানায়? একটা সময় ছিল যখন গ্রামে-গঞ্জের বাচ্চাদের ‘বিন্দু মাসি’র ভয় দেখিয়েই ঘুম পাড়াতেন মায়েরা! পর্দায় এমনই ছিল তার দাপট। একাধিক ছবি এবং ধারাবাহিকে কাজ করেছেন অনামিকা সাহা (Anamika Saha)। দাপুটে খলনায়িকা থেকে স্নেহময়ী মা, অনামিকা সাহা সব চরিত্রেই ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তবে ইদানিং টলিউড যেন তাকে ব্রাত্য করেছে।
৯০ এর দশকের এই দাপুটে খলনায়িকা শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন। পর্দায় তার উপস্থিতি দর্শকদের হাড়হিম করতো। এখনও গ্রামে-গঞ্জে অনুষ্ঠানে গেলে ‘বিন্দু মাসি’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন দর্শকরা। তবে টলিউড এখন আর তাকে সেভাবে ডাকে না। তাই বলতে গেলে চরম অভিমান ভর করেছে তার মনে। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “এখনকার পরিচালক-প্রযোজকরা আমাদের জন্য চরিত্র ভাবেন না। একটা সময় ছিল, যখন আমাদের কথা ভেবে চরিত্র লেখা হত।”
প্রসেনজিতের সঙ্গে একাধিক ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। কিন্তু একসময় টলিউডের ইন্ডাস্ট্রি বলে পরিচিত সেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও তার শতাধিক সিনেমার সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে এখন আর সম্পর্ক রাখেন না। ‘মায়ের আঁচল’ ছবিতে প্রসেনজিতের সঙ্গে অনামিকার মা-ছেলের বন্ডিং দর্শকদের চোখে এনেছিল জল। তা সত্ত্বেও প্রসেনজিৎ এখন আর তার খোঁজ নেন না বলে এক সংবাদমাধ্যমের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন অনামিকা।
শুধু তাই নয়, টলিউড অভিনেত্রী অপরাজিত আঢ্যের প্রতিও অভিমান রয়েছে তার মনে। কারণ অপরাজিতাকে তিনিই হাত ধরে টলিউডে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু অপরাজিতাও এখন আর তার খোঁজ নেন না। বর্ষিয়ান অভিনেত্রীর কথায়, “অপরাজিতা আঢ্যকে আমিই হাত ধরে সিনেমায় সুযোগ করিয়ে দিলাম। সেটা ছিল স্বপন সাহার ‘শিমুল-পারুল’ সিনেমা। সেটার জন্য প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বকুনিও খেয়েছি।
ওর সঙ্গে তখন আমার সম্পর্কটাও মা-মেয়ের মতো ছিল। দু’জনে তখন ‘তৃষ্ণা’ নামে একই সিরিয়ালে অভিনয় করছি। ‘মামমাম’ বলে ডাকত আমাকে। আমার মেয়ে চলে গিয়েছিল বেঙ্গুলুরু পড়তে। ও সেই শূন্যস্থানটা পূরণ করেছিল। কিন্তু আজ অপরাজিতা এই জায়গায় পৌঁছেছে, কোনওদিন-কোথাও আমার নাম করেনি।”
অনামিকা এখনও অভিনয় করার ইচ্ছে মনে মনে পোষণ করেন। একসময় সিনেমার পাশাপাশি ধারাবাহিকেও চুটিয়ে অভিনয় করতেন। তবে ইদানীং আর ধারাবাহিকের কাজের ধরণ তার ঠিক পছন্দ হয় না। কিন্তু জাত অভিনেত্রী কখনও কি লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন থেকে দূরে থাকতে পারেন? এখনও মনের মত চরিত্রের ডাক পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি।