মুসলিম হয়ে বিয়ে করেছেন ব্রাহ্মণের মেয়েকে, জাতধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন মীর

সারা বাংলার সকালটাই এখন কেমন যেন ফিকে ফিকে। রোজ সকালে এক কাপ চা হাতে রেডিও মির্চি ৯৮.৩ স্টেশন ধরলেই ও প্রান্ত থেকে শোনা যেত গমগমে এক কণ্ঠস্বর। এভাবেই সকালটা শুরু করা বাঙালির অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিলেন মীর আফসার আলি (Mir Afsar Ali)। কিন্তু বাঙালির কপাল খারাপ। রেডিও মিরচি থেকে অবসর নিলেন ‘সকাল ম্যান’।

মীর যেদিন আনুষ্ঠানিকভাবে রেডিও মির্চি ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন সেদিন যেন সকলের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। রবিবারের সানডে সাসপেন্সে মীরের কণ্ঠস্বর আর শোনা যাবে না ভাবলেও যেন মনটা কেমন করে ওঠে। আজ সারা বাংলাজুড়ে শুধু তারই চর্চা। কিন্তু মীরকে নিয়ে চর্চার কোনওদিনই অন্ত ছিল না কোনও।

Mir Afsar Ali replied on Trolling about his Religion

জাতি-ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে সব ধর্মের মানুষের কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরেছেন তিনি। জাতপাত নয়, মানবতাই তার কাছে আসল ধর্ম। তিনি রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের সন্তান। তবে তার কাজেকর্মে কিংবা কথাবার্তায় কখনও ধর্মভীরুতা প্রকাশ পায়নি। সকল ধর্মের মানুষকে আপন করে নিয়েছেন তিনি।

বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।সকল সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানাতে কখনও দ্বিধা করেননি তিনি। জানলে হয়তো অবাক হবেন মীরের স্ত্রীর নাম নাম সোমা ভট্টাচার্য। হিন্দু ব্রাহ্মণের মেয়েকে বিয়ে করেন মীর। ধর্ম তাদের ভালোবাসায় যেমন বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি, সংসারেও অশান্তি সৃষ্টি করতে পারেনি।

আজ মেয়ে মুসকানকে নিয়ে সুখে শান্তিতে ঘর করছেন সোমা এবং মীর। সব ধর্মের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি রেখে চলেন বলে কখনও কখনও সোশ্যাল মিডিয়াতে তাকে হাসির খোরাক হতে হয়। নিজ সম্প্রদায় এবং ভিন্ন সম্প্রদায়ের রোষের শিকার হতে হয় তাকে। তবুও কটাক্ষের কারণে কখনও নিজেকে বদলাননি তিনি।

তার হাত ধরে রেডিও মির্চি এতখানি সমৃদ্ধ হয়েছে। আজ সাফল্যের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে তিনি রেডিও মির্চি ছাড়লেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে এখনও আশা জিইয়ে রেখেছেন তিনি। ফেসবুক পোস্টের শেষ লাইনে লিখেছিলেন, ‘গল্পের পরবর্তী অংশ ব্রেকের পর’। ব্রেকের পর হয়তো সত্যিই আবার কোনও বড় ধামাকা আনতে চলেছেন তিনি। তার প্রতি বিশ্বাস রেখেছেন ভক্তরা।