
ভারতে করোনা সংক্রমনের খবর মিলতেই কোনোরকম ঝুঁকি না নিয়ে সংক্রমন শুরুর একেবারে প্রাথমিক পর্যায়েই সারা ভারতে ২১ দিনের লকডাউন ডাকেন নরেন্দ্র মোদী। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত বেড়ে হয়েছে ১০,৩৬৩ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ৩৩৯ জন। তাই প্রথম ধাপের লকডাউনের মেয়াদ শেষ হ্তেই ৩রা মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ান মোদী।
মঙ্গলবার দেশবাসীর উদ্দ্যেশ্যে ভাষণে মোদী বলেন,২০ এ এপ্রিল পর্যন্ত হটস্পট বা হটস্পট হতে পারে এমন জায়গাগুলির ওপর কড়া নজরদারি দেওয়া হবে। যেসব এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে থাকবে সেসব এলাকাকে কিছু ছাড় দেওয়া হবে।
সংশোধিত গাইডলাইন অনুসারে, বিমান, ট্রেন ও সড়ক পরিবহণ পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ। স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। শিল্প, বাণিজ্য ও পরিষেবা ক্ষেত্র বন্ধ থাকবে। এছাড়াও বন্ধ রাখতে হবে, সিনেমা হল, শপিং মল, থিয়েটার। কোনও ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জমায়েতও করা যাবে না। বাড়ির বাইরে বা কাজের জায়গায় মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অন্যথায় কড়া জরিমানার উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায়। হটস্পট এলাকা থেকে বাসিন্দাদের প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া বা বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
দ্বিতীয় দফার লকডাউন বাড়তেই সাধারণ মানুষের মনে আবারও অনেক প্রশ্ন উঠেছে। জেনে নিন দ্বিতীয় দফার লকডাউন সম্পর্কে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর।
• দ্বিতীয় দফার এই লকডাউন কতদিন পর্যন্ত চলবে?
ভারতে করোনা সংক্রমন বা কমিউনিটি সংক্রমন নিয়ন্ত্রনে আনতে এর আগেই.২৫ শে মার্চ থেকে ১৪ই এপ্রিল লকডাউন ঘোষনা করেন নমো। করোনা সংক্রমন পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবার সেই লকডাউনের মেয়াদ ৩রা মে মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
• দ্বিতীয় দফার লকডাউনে কি কি ছাড় থাকছে?
মঙ্গলবার দেশবাসীর উদ্দ্যেশ্যে ভাষন দিয়ে নমো বলেন, হটস্পট এলাকাগুলিকে কড়া লকডাউন মানতে হবে। ও যেসব জায়গাগুলি হটস্পট নয় সেসব জায়গাগুলিকে ২০ রা এপ্রিলের পরে কিছু ছাড় দেওয়া হতে পারে। তবে সেসব জায়গার পরিস্থিতি যদি খারাপ হয় তবে তৎক্ষণাৎ শিথিলতা বাতিল করা হবে। কৃষি ও কৃষিজাত কাজেও ২০ শে এপ্রিলের পর ছাড় দেওয়া হবে।
• দ্বিতীয় দফার লকডাউনে কোন কোন অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা মিলবে?
প্রথম দফার লকডাউনে মুদির দোকান, ফল সব্জি, দুধ, মাছ মাংসের দোকান, ব্যঙ্কিং পরিষেবা, এটিএম, খবরের কাগজ,টেলিকম সার্ভিস,ইলেকট্রনিং সংবাদমাধ্যম, কেবল পরিষেবা, ব্রডকাস্টিং পরিষেবা ও ইন্টারনেট পরিষেবা চালু রাখা হয়েছিল। এছাড়াও গ্যাস, পেট্রোল পাম্প,হিমঘর, বিদ্যুৎ পরিষেবা ও বেসরকারী নিরাপত্তা রক্ষী পরিষেবাও চালু রাখা হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার লকডাউনেও এই সব পরিষেবা চালু থাকতে পারে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আজ কেন্দ্রের তরফ থেকে প্রকাশ করা হবে।
• দ্বিতীয় দফার লকডাউনে কি ট্রেন চলবে? যারা যারা ১৪ই এপ্রিল থেকে ৩রা মে এর মধ্যে ট্রেনের টিকিট বুক করেছেন তারা কি টাকা ফেরত পাবেন?
লকডাউনের মেয়াদ বাড়াতেই যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা স্থগিত রাখার সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে। ৩রা মে মধ্যরাত পর্যন্ত যাত্রীবাহী কোনো ট্রেন চলবে না। শুধুমাত্র মালগাড়ি ও পার্সেল ট্রেন চলবে। অনলাইনে যাঁরা টিকিট বুক করেছিলেন, তাঁদের অনলাইনে টিকিটের পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে। যাঁরা কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কেটেছিলেন, তাঁরা ৩১ জুলাই পর্যন্ত টিকিটের পুরো টাকা ফেরত নিতে পারবেন।
• দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউনে কি বিমান পরিষেবা চালু থাকবে?
৩রা মে পর্যন্ত অন্তর্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্ত বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
• আর কি কি পরিষেবা বন্ধ থাকছে?
স্কুল,কলেজ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এছাড়াও সিনেমা হল,থিয়েটার, শপিং মল বন্ধ ত্রাখা হবে। ধর্মীয় স্থানগুলিতে জমায়েত নিষিদ্ধ। প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বেরোলে অবশ্যই মাস্ক পড়ে বেরোতে হবে।