বলিউড দেয়নি যোগ্য সম্মান, খলনায়ক হয়ে আজীবন দর্শকের অভিশাপ কুড়িয়েছেন সদাশিব অমরাপুরকর

৮০-৯০ এর দশকের প্রত্যেকটি হিট ছবির পেছনে কাজ করেছে হিরো এবং ভিলেনের জোরদার টক্করের রসায়ন। যে ছবির ভিলেন যত বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারেন পর্দায়, সেই ছবি তত বেশি হিট তার প্রমাণ ছিল বক্স অফিস। সেই সময় বলিউডের (Bollywood) নামী ভিলেন চরিত্রের অভিনেতাদের মধ্যে ছিলেন শক্তি কাপুর, প্রেম চোপড়া, ড্যানি ডেনজংপা অমরেশ পুরী থেকে শুরু করে সদাশিব অমরপুরকর (Sadashiv Amarapurkar)।

বলিউডের বহু হিট ছবির জাঁদরেল ভিলেন ছিলেন সদাশিব। ঠান্ডা মাথার ভয়ংকর চরিত্রের ভিলেন হিসেবে তার অভিনয়ে পর্দার এ প্রান্তের দর্শকদের হাড়ে হিম ধরত। একটা সময় পর বলিউড থেকে হারিয়েই যান তিনি। তার জীবনেরই কিছু অজানা কাহিনী নিয়ে সাজানো আজকের এই প্রতিবেদন। সদাশিব অমরপুরকরের জন্ম হয়েছিল ১৯৫০ সালের ১১ই মে। তার জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা হয়ে উঠেছিল পুণে শহরে।

Sadashiv Amarapurkar

ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি গভীর ভালোবাসা ছিল তার। সেই সঙ্গে পড়াশোনার প্রতিও তার অগাধ ভালোবাসা ছিল। তিনি বড় হয়ে পুনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনাও শেষ করেন। এরপর অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হন। বলিউডে তার প্রথম ব্রেক এসেছিল ১৯৮৩ সালে। সেই ছবির নাম ছিল ‘অর্ধ সত্য’।

ডেবিউতে প্রথম সুযোগেই সদাশিব নিজেকে প্রমাণ করেন। এই ছবিতে সেরা সহ অভিনেতা বিভাগে তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন। তারপর থেকে তাকে আর কখনও ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক ছবির প্রস্তাব এসেছে তার কাছে। প্রথম ছবির পর তিনি সঞ্জয় দত্ত অভিনীত ‘সড়ক’ ছবিতে অভিনয় করেও প্রশংসা পান।

Sadashiv Amarapurkar

‘সড়ক’ ছবির জন্য তিনি আবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতে নেন। এই সময় সেরা খলনায়ক বিভাগে পুরস্কার এসেছিল তার হাতে। ১৯৯২ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘আঁখে’র‌ ইন্সপেক্টর প্যায়ারে মোহন চরিত্রটির জন্য তিনি জনপ্রিয়তা পান। তবে শুধু ভিলেন হিসেবে নয়, ‘হাম হ্যায় কামাল কে’ ছবিতে ইন্সপেক্টর গোডবোলে চরিত্রে একজন কমেডি অভিনেতা হিসেবেও তিনি দর্শকদের মনে জায়গা করে নেন। হিন্দির পাশাপাশি বাংলা, মারাঠি, তেলেগুসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় ৩০০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ২০১৩ সালে ‘বম্বে টকিজ’ ছবিতে তাকে শেষবার দেখা যায়।

দীর্ঘ দিন ফুসফুসের সংক্রমণজনিত অসুখে ভোগার পরে ২০১৪-র নভেম্বর মাসে প্রয়াত হন অভিনেতা সদাশিব অমরাপুরকর। মুম্বইয়ে তাঁর নিথর দেহ রাখা ছিল শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য। কিন্তু পরিচালক অনিল শর্মা, গোবিন্দ নিহালনি ও অভিনেতা রাজা মুরাদ ছাড়া ইন্ডাস্ট্রির কাউকে সেখানে দেখা যায়নি তাঁকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে। স্ত্রী সুনন্দা, তিন মেয়ে এবং অসংখ্য ভক্তকে রেখে গিয়েছেন সদাশিব অমরাপুরকর।