বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে। দু’চোখে রুপোলী পর্দায় অভিনয়ের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূঁজি করেই মোতিহারি থেকে মুম্বই পাড়ি জমিয়েছিলেন প্রভাকর শরণ। কিন্তু ভাগ্য মুখ তুলে চায়নি। গেঁয়ো যোগী শরণকে ভিখ দেয়নি বলিউড। ব্যার্থ হয়েছেন। পরিবার ছেড়ে গেছে। রক্তাক্ত হয়েছেন। খারাপ সময়ের সঙ্গে লড়েছেন। এবং সসম্মানে ফিরে এসেছেন। বিহারের প্রভাকর এখন লাতিন আমেরিকার চলচ্চিত্রের সুপারস্টার। এক স্বপ্নপূরণ। এক জীবনের গল্প যা সিনেমাকেও হার মানায়।
এই বলিউড এক আজব জায়গা। প্রতিদিন কত-শত স্বপ্নই যে মরছে। কিছু অভিনেতা-নেত্রী পরিবারের ছেলে-মেয়েরা হয়তো সুযোগ পায়। কোনও কোনও আশা হয়তো সত্যি পূর্ণ হয়। কিন্ত শরণের বেলায় তেমন ঘটেনি। নিয়তি মুচকি হাসেনি। সব পরিশ্রম জলে। হতাশ শরণ চলে যান কোস্টারিকা। এখানে এসেই প্রেমে পড়লেন এক তন্বীর। বিয়েটাও সেরে ফেললেন। অবস্থার কোনও পরিবর্তন হল না। বিয়েটাও টিকল না।
২০১০ সালে জীবন ছত্রভঙ্গ। প্রোজেক্টে ভরাডুবি, ব্যবসায় ফেল, সন্তান নিয়ে স্ত্রী ছেড়ে গেছেন। বিধ্বস্ত প্রভাকর শরণ ফিরে এলেন দেশে। টিকে থাকার একমাত্র উপায় লড়াই। চার বছর ধরে চালিয়েছেন। ফের ফিরে গেছেন কোস্টারিকায়। চেনা পিচে এবার রান এল। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ টেরেসা রডরিগেজ সেরদাস।
কোস্টারিকা ও বলিউডের যৌথ উদ্যোগে তৈরি সিনেমায় অভিনয় করলেন শরণ। বাজিমাত। জিতে নিলেন দর্শকহৃদয়। ভাগ্যদেবী প্রসন্ন হলেন। সাফল্যের মুখ দেখলেন শরণ। ন্যান্সি ডবলেস ও স্কট স্টেইনারের সঙ্গে তাঁর অভিনীত প্রথম স্প্যানিশ সিনেমা এনট্যাঙ্গেলডঃ দ্যা কনফিউশন (এন্যারদ্যাওসঃ লা কনফিউশন)
প্রশংসিত হল দর্শকমহলে। কোস্টারিকায় বছরের জনপ্রিয় সিনেমার তকমা পেয়েছে ‘দ্যা কনফিউশন’। বিহার থেকে কোস্টারিকার সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়জয়। গলি থেকে রাজপথে আসা এক সফল জীবনের নাম প্রভাকর শরণ।