কেবলমাত্র এই একটি কারণেই ভেঙে গেল আমির খান ও কিরণ রাও-এর সম্পর্ক

‘কাপল গোল’, ‘পাওয়ার কাপল’, বলিউডের (Bollywood) ‘পারফেক্ট কাপল’ এর ইমেজ এবার ভেঙেই ফেললেন বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খান (Aamir Khan) এবং তার স্ত্রী কিরণ রাও (Kiran Rao)। দীর্ঘ ১৫ বছরের দাম্পত্যের অবসান হলো আজ। আমির খানের দ্বিতীয় বৈবাহিক জীবনের অবসান হলো। দীর্ঘ কয়েক মাস সেপারেশনে থাকার পর আমির এবং কিরণ বর্তমানে একে অপরের থেকে সারা জীবনের জন্য আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট মারফত সেকথা ঘোষণা করলেন বিবাহ বিচ্ছিন্ন দম্পতি।

ঠিক কী লিখলেন তারা? আমির এবং কিরণ একটি যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন বেশ কিছুদিন ধরেই তারা প্ল্যানড সেপারেশনে ছিলেন। অবশেষে খাতায়-কলমে সই করে সম্প্রতি আইনত বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন তারা। এবার থেকে তাদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। যে অধ্যায়ে অনুরাগীদের পাশে পেতে চান এই সেলিব্রিটি জুটি। তবে ব্যক্তিগত জীবনে বিচ্ছেদ হলেও পেশাদারিত্বে তার কোনও প্রভাব পড়বে না বলে নিশ্চিত করেছেন আমির এবং কিরণ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা লিখেছেন, “এই ১৫ বছরের বিবাহিত জীবনে আমরা একে অপরের সাথে বহু অভিজ্ঞতা, আনন্দ, উচ্ছ্বাস ভাগ করে নিয়েছি। আমাদের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার উপর ভিত্তি করে। এবার আমরা আমাদের জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছি। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে নয়, আমাদের সন্তানের বাবা-মা এবং পরিবারের সদস্য হিসেবেই আমরা এবার থেকে একে অন্যের পাশে থাকবো”।

প্রসঙ্গত কিরণ এবং আমিরের এক সন্তান রয়েছে, নাম তার আজাদ। সন্তানকে মা বাবার অভাব তারা বুঝতে দিতে চান না। ঠিক সেই কারণেই তারা বিবাহ বিচ্ছিন্ন হলেও ‘কো-প্যারেন্ট’ হিসেবেই সন্তানের দেখভাল করবেন বলে জানিয়েছেন। তাদের সন্তান তার বাবা-মার সঙ্গে থেকেই বড় হবে। সব সময় বাবা-মাকে পাশে পাবে। পাশাপাশি, তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের এই ভাঙ্গন পেশাগত জীবনে কোনও প্রভাব ফেলবে না বলেই নিশ্চিত করেছেন তারা।

আগামী দিনে ছবি বানানোর ক্ষেত্রে পার্টনারশিপ তাদের আগের মতোই থাকবে। পানি ফাউন্ডেশন এবং তাদের পেশাগত জীবনের অন্যান্য প্রজেক্টের কাজ আগে যেমনভাবে চলছিল, ভবিষ্যতেও তেমনই চলবে বলে জানিয়েছেন তারা। জীবনের এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবার পরিজন এবং বন্ধু-বান্ধবদের সমর্থন সম্পূর্ণভাবে পেয়েছেন তারা। যে কারণে সোশ্যাল মাধ্যমে তাদের কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভোলেননি বলিউডের এই সদ্য বিবাহ-বিচ্ছিন্ন দম্পতি।

একই সঙ্গে তাদের সমস্ত শুভাকাঙ্ক্ষীদের থেকেও শুভেচ্ছা এবং সমর্থন চেয়ে নিয়েছেন আমির এবং কিরণ। তারা চান, তারা যেমন ভাবে তাদের জীবনের এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে নতুন অধ্যায়ের শুরু হিসেবে দেখছেন, তাদের শুভানুধ্যায়ীরাও যেন ঠিক তেমন ভাবেই তা গ্রহণ করেন। প্রসঙ্গত, ‘লগান’ ছবির সেটেই আমির এবং কিরণের প্রথম আলাপ হয়। ছবিতে আমির অভিনেতার ভূমিকায় এবং কিরণ সহ-পরিচালকের ভূমিকায় কাজ করেছিলেন।

এমনকি আমিরের প্রথম স্ত্রী রিনা দত্তের সঙ্গেও ছবির কাজ করেছেন কিরণ। এরপর আমিরের সঙ্গে রিনার ১৪ বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর ৩ বছর কিরণের সঙ্গে সহবাস করার পরেই আমির এবং কিরণ আইনত স্বামী-স্ত্রী হন। ২০০৫ সালে তাদের বিবাহ হয়। ২০১১ সালে সারোগেসি মারফত তাদের পুত্র আজাদের জন্ম হয়। অবশেষে বিয়ের ঠিক ১৫ বছরের মাথায় আমিরের দ্বিতীয় বিবাহও ভেঙে গেল। যদিও তারা একে অন্যের পরিবারের সদস্য হিসেবেই পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।