বর্তমানে সাইবার প্রতারণা (Cyber Fraud) দিন প্রতিদিন বাড়ছে। ডিজিটাল মিডিয়ার এই যুগে হাজার সাবধানতা অবলম্বন করলেও প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে সারা জীবনের সঞ্চয় হারিয়ে ফেলছেন বহু মানুষ। লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন জনপ্রিয় টেলিভিশন (Bengali Telivision) অভিনেতা শৈবাল ভট্টাচার্য (Saibal Bhattacharya)। তার অ্যাকাউন্ট থেকে রাতারাতি উধাও হয়ে গিয়েছে ১১ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা।
এই মুহূর্তে শৈবাল ভট্টাচার্যের অ্যাকাউন্টে পড়ে রয়েছে মাত্র ৬৯ পয়সা। হাতে নেই কাজ, কীভাবে সংসার চলবে ভেবে পাচ্ছেন না শৈবাল ভট্টাচার্য। তিনি তার একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে ১৪ লক্ষ টাকা তার সেভিংস অ্যাকাউন্টে রেখেছিলেন। সেখান থেকে কিছু টাকা খরচ করে ১১ লক্ষের কিছু বেশি টাকা পড়েছিল। লক্ষ্মীপূজার পর থেকে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে বলে তার কাছে একের পর এক মেসেজ আসতে থাকে।
সেই মেসেজের লিঙ্কে ক্লিক করে নিজের বিদ্যুৎ বিল মেটাতে গিয়েই সর্বস্বান্ত হয়ে যান শৈবাল ভট্টাচার্য। নভেম্বরের প্রথম ২ দিন সারাদিনে মোট ৮ বার তার সেভিংস একাউন্ট থেকে ২৫ টাকা করে কেটে নেওয়া হতে থাকে। পেশা নভেম্বর তিনি দেখেন তার মোবাইলে মোট ৮৫০ এসএমএস জমা হয়েছে এবং সব টাকা খোয়া দিয়ে অ্যাকাউন্টে মাত্র ৬৯ পয়সা পড়ে রয়েছে।
এই জালিয়াতির চক্করে পড়ে তিনি এবং তার পরিবার এখন সর্বস্বান্ত। সংবাদমাধ্যমকে অভিনেতা জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের ভিক্ষা করা ছাড়া, আর অনাহারে মৃত্যুবরণ করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। আমার সত্তর বছরের মা, আমার স্ত্রী, আমার সন্তানেরা (পোষ্য) প্রায় না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। জানি না এইভাবে কতদিন টানতে পারব।’’ এখনও পর্যন্ত তিনি তার টাকা উদ্ধার করতে পারেননি।
এত বড় সাইবার ফ্রডের পাল্লায় পড়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন অভিনেতা। অর্থের অভাবে অনাহারে না খেয়ে মরতে হবে! হতাশ হয়ে পড়েছেন অভিনেতা। শৈবাল ভট্টাচার্য প্রথমা কাদম্বিনী, মিঠাই, উড়ন তুবড়ি ধারাবাহিকের এই অভিনেতাকে এখন কোনও সিরিয়ালে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে না। অভিনেতার স্ত্রী স্নিগ্ধা বসু সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘একদম শেষ হয়ে গেছি। কোনও দিক থেকে কিছু দেখতে পারছি না’।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শৈবাল ভট্টাচার্য। ফেসবুকে লাইভে এসে তিনি নিজেই ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে নিজেকে আঘাত করেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি জানিয়েছিলেন ওই দিন মদ্যপ অবস্থায় তিনি এই কান্ড ঘটিয়ে ফেলেন।