চলতি বছরে বেশ কয়েকটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। এই রায়গুলি আইনের এক্তিয়ারের মধ্যে থেকেও সমাজজীবনে প্রভাব ফেলেছে খুব বেশী। সামাজিক সমস্যাগুলিকে যথার্থ ভাবে চিহ্নিত করেছে। তাই এর গুরুত্বও অপরিসীম। এখানে তেমনই ৫ টি রায়ের তালিকা করলাম আমরা
৩৭৭ ধারা লোপ
ভারতের ইতিহাসে ঠাই করে নেবে ৬ সেপ্টেম্বর। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সময়ের আইনের অবসান ঘটিয়ে ভারতীয় পিনাল কোর্ডের ৩৭৭ ধারাকে অবলুপ্ত ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়ে দেয়, সমকামিতা অপরাধ নয়। দির্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী, যৌনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যক্তি স্বাধীনতাই মান্যতা পেল।
পরকীয়া – অপরাধ নয়
এও এক ঔপনিবেশিক আইন। ভারতীয় পিনাল কোর্ডের ৪৯৭ ধারা নিয়ে বহু অভিযোগ ছিল। বিশেষত, স্ত্রীকে স্বামীর হাতের পুতুল হয়ে থাকার অভিযোগ। এটাকেই অসাংবিধানিক মন্তব্য করে, বিচারপতিরা এই আইনের বিলোপ ঘটান।
আরও পড়ুন : কড়া হচ্ছে ট্রাফিক আইন ; এই ১২টি আইন না জানলে বিপদে পড়বেন
তিন তালাক – বেআইনি
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মেয়েদের জয়। এই রায়ের পর এটাই ছিল দেশবাসীর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। তিন বার ‘তালাক’ বলে বিবাহিত সম্পর্কের ইতি ঘটানো এই কুপ্রথার অবসান ঘটিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গত বছরের আগস্ট মাসের শেষদিকে তিন তালাক প্রথাকে বেআইনি ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন : ভারতীয় নাগরিক হিসেবে এই ২০ টি অধিকার সম্পর্কে আপনার জানা দরকার
ইচ্ছামৃত্যু
প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া বা স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবীর অধিকারের স্বীকৃতি দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। চলতি বছরের মার্চ মাসে ঐতিহাসিক এই রায় দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়,শারীরিক যন্ত্রণামুক্ত এবং মসৃণ মৃত্যুপ্রক্রিয়া মানুষের সম্মানজনক জীবনের অধিকারের সঙ্গেই সম্পৃক্ত। সুতরাং, নিশ্চিত মৃত্যুপথযাত্রী অথবা জীবন্মৃত অবস্থার কোনও রোগী নিজের সম্মানজনক এবং যন্ত্রণাহীন মৃত্যু চাইতেই পারেন। সেই অধিকার তাঁর রয়েছে।
আরও পড়ুন : বিদায়ী প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন যে রায়গুলির জন্য
শবরীমালা রায়
ঋতুমতী মহিলাদের জন্য শবরীমালার দরজা বন্ধ রাখা যাবে না। ২৮ সেপ্টেম্বর এই ঐতিহাসিক রায় দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। ভারতের মতো দেশে এই রায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। এই ধরনের সামাজিক প্রথার বিরুদ্ধে বরাবর সমাজের ভিতর থেকেই বিদ্রোহ জেগেছে। এবার সেই স্বর পৌঁছনো গেছে দেশের সর্বোচ্চ কোর্টেও। দেশের সামাজিক স্বাস্থ্যের জন্য পক্ষে এটা সুলক্ষণ।