দক্ষিণী ছবিকে টেক্কা দিতে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে টলিউড, আসছে ধামাকাদার ১০টি বাংলা ছবি

এবার টলিউডের (Tollywood) মরা গাঙে যেন বান এল! শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, যশ দাশগুপ্ত এবং ওম সাহানির হাত ধরে নতুন করে শ্বাস নিতে শুরু করেছে বাংলা ছবি। তাই তো এবার বাংলা বিনোদনের দুনিয়াতেও হতে চলেছে মহা ধামাকা। আগামী ২৭শে এপ্রিল বাংলাতে মুক্তি পাচ্ছে একসঙ্গে চারটি ছবি। শৌভিক কুণ্ডুর ‘আয় খুকু আয়’, অরিন্দম শীলের ‘শবর’, শিলাদিত্য মৌলিকের ‘চিনে বাদাম’, অয়ন দে-র ‘ভয় পেও না’, এবার বলিউড এবং দক্ষিণের ছবির হাড়ে হিম ধরাতে আসছে।

একই দিনে চারটি ছবির মুক্তি পাওয়া নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দ্বিধা-বিভক্ত টলিউড। যদি এক দিনে একটিই ছবি মুক্তি পায় সে ক্ষেত্রে ভাল ব্যবসা করার সুযোগ থাকে। একের বেশি ছবি মুক্তি পেলেই বাণিজ্য ভাগ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে সেসব চিন্তা না করেই পরিচালক এবং প্রযোজকরা দর্শকদের উপর ভরসা রেখে একে অপরের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। এতে হল মালিকরা চিন্তিত হলেও বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না টলিউডের ব্যক্তিত্বরা।

bhoy peyona official trailer

এই প্রথম ওম সাহানি এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় জুটি বাঁধছেন। একদিনে ৪ টি ছবির মুক্তির বিরুদ্ধে যারা কথা বলছেন তাদের প্রতি ওমের বক্তব্য, ‘‘এত দিন শিরোনাম ছিল, টলিউড মৃতপ্রায়। যে কোনও দিন বন্ধ হয়ে যাবে বাংলা বিনোদনের দরজা। যেই ঘুরে দাঁড়াল ইন্ডাস্ট্রি, সবার প্রশ্ন এক দিনে কেন চারটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে? যেন সবেতেই সমস্যা। পাশাপাশি আমরা সবার সঙ্গে সবার টক্কর বাধাতেই ব্যস্ত। এটা ভাবি না, একগুচ্ছ বাংলা ছবির মুক্তি মানে বাংলা বিনোদনে নতুন জোয়ার।’’

তবে হল মালিকরা কিন্তু এমনটা ভাবছেন না। অজন্তা প্রেক্ষাগৃহের মালিক শতদীপ সাহা বিরক্ত হয়ে আনন্দবাজারের কাছে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, ‘‘এটা বাণিজ্য না নোংরামো? ছবি মুক্তির নামে অসুস্থ প্রতিযোগিতা! পরিচালকেরা মুক্তির আগে এক বারও ভাবছেন না, আমরা প্রেক্ষাগৃহ দেব কোথা থেকে! কারণ, ছবির সংখ্যা বাড়লেও হলের সংখ্যা তো বাড়ছে না! কোনও ছবি জনপ্রিয় হলেও তাকে হল থেকে নামিয়ে নিতে হবে। পরের ছবিকে জায়গা ছাড়ার জন্য।’’ তার উপর আবার হিন্দি, ইংরেজি এবং দক্ষিণী ছবিও রয়েছে। কাকে ছেড়ে কাকে জায়গা দেবেন?

টলিউডের বাণিজ্য বিশ্লেষক পঙ্কজ লাডিয়া বলেছেন, ‘‘বলিউডের মতো টলিউডের প্রযোজকেরাও যদি পরস্পর আলোচনা করে ছবি-মুক্তির দিন ঘোষণা করেন তা হলে এই সমস্যা হয় না। কলকাতার সমস্ত বড় প্রযোজনা সংস্থাগুলো মুখোমুখি বসুক। ভাগ করে নিক মুক্তির দিন। প্রতি সপ্তাহে দুটো করে বাংলা ছবি মুক্তি পাক। তবেই না ঠিকঠাক টক্কর দিতে পারবে। বলিউড এই জন্য সপ্তাহে একটি করে ছবি-মুক্তি ঘটায়। ফলে, বাণিজ্যও করে ভাল।’’

শীঘ্রই টলিউডে আসছে ছবির ঝড়। ‘কলকাতার হ্যারি’, ‘মিনি’, ‘এক্স ইক্যুয়ালটু প্রেম’, ‘অপরাজিত’, ‘বেলাশুরু’, ‘জালবন্দি’, ‘আয় খুকু আয়’, ‘শবর’, ‘চিনেবাদাম’-সহ ৮-১০টি ছবি রয়েছে মুক্তির দোরগোড়ায়। পরিচালক-প্রযোজকরা দর্শকদের উপর আস্থা রাখছেন। এই পরিস্থিতিতে দর্শকরা যার পাশে থাকবেন, সেই ছবিই ভাল ব্যবসা করবে। তাই এখন টলিউডের ভাগ্য তোলা রইলো দর্শকদের হাতে।