কাজ নিয়ে শত্রুতা, বন্ধ মুখ দেখাদেখি! আশার কীর্তি মেনে নিতে পারেননি লতা

আশা ভোঁসলে (Asha Bhosle) এবং লতা মঙ্গেসকার (Lata Mangeshkar), একসময় সুরের দুনিয়াতে রাজত্ব ছিল এই দুই বোনের। দুজনের গায়কীর প্রশংসায় আজও পঞ্চমুখ ভক্তরা। তাদের ছাড়া যেন অপূর্ণই থেকে যেত সুরের দুনিয়া। দুই বোন একই সময়ে একই কেরিয়ার বেছে নিয়েছিলেন। কাজেই সাধারণের মনে তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে কৌতূহল ছিল প্রবল। অনেকেই মনে করতেন দুই বোনের মধ্যে রেষারেষি চলত গান নিয়ে। আশা এবং লতার মধ্যে এগিয়ে কে? এই নিয়ে তর্কাতর্কিও বেঁধেছে ভক্তদের মধ্যে।

তবে যাদের নিয়ে এত চর্চা, তাদের সম্পর্কে এর কোনও প্রভাব পড়েছে কি? সত্যিই কি একে অপরকে হিংসা করতেন তারা? একবার একটি সাক্ষাৎকারে খোলাখুলিই সেই বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছিলেন সুরের সম্রাজ্ঞী। গান নিয়ে দুজনের মধ্যে রেষারেষির বিতর্ক হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে দুই বোনের মধ্যে এক সময় সম্পর্ক যে তলানীতে ঠেকেছিল, তাও মেনে নিয়েছেন। আসলে ব্যক্তিগত জীবনে আশা এমন কিছু করে বসেছিলেন যা লতা মেনে নিতে পারেননি।

দুই বোনের মধ্যে একসময় বনিবনা ছিল না, এ কথা সত্যি। তবে তা কেরিয়ার নিয়ে, এই ভুল ধারণা থেকে গিয়েছে সাধারণের মনে। লতা তার পুরনো একটি সাক্ষাৎকারে সেই ভুল ভেঙেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি আর আশা খুব ঘনিষ্ঠ। এখন আমাদের আর রোজ দেখা হয় না কারণ ও অনেক দূরে থাকে ওর ছেলে আনন্দের সাথে। এর আগে ও ঠিক আমার পাশেই থাকত। প্রভু কুঞ্জে আমাদের দু’জনের অ্যাপার্টমেন্টের মাঝে একটা দরজাও ছিল। আমি জানি অনেকের হয়তো বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। কিন্তু এটাই সত্যি। হ্যাঁ আমাদের মধ্যে কিছু সমস্যা ছিল অতীতে? কোন ভাই-বোনের মধ্যে না থাকে? ও অল্প বয়সে এমন কিছু করেছিল যা আমি মেনে নিতে পারিনি।’’

   

বোন আশা এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করে নিয়েছিলেন, তা দিদির মোটেই পছন্দ ছিল না। তাই বোনের উপর রাগ হয়েছিল তার। প্রয়াত গায়িকার কথায়, ‘‘হ্যাঁ, আমার মনে হয়েছিল এটা খুব জলদি হয়েছে। আমার মন বলেছিল সেটা খুব বাজেভাবে শেষ হবে। তাই হয়েছিল। তবে সেটা ওর জীবন। আর ওর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার। আমাদের পরিবারে কেউ কারও সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলে না।”

আর বাকি রইল দুই বোনের মধ্যে কাজ নিয়ে রেষারেষির প্রসঙ্গ, সেই সম্ভাবনাও ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন লতা মঙ্গেসকার। বরং বোনের তরফ থেকে বরাবর শ্রদ্ধা এবং সম্মান পেয়েছেন তিনি। সব জল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে তার জবাব ছিল, আশা এবং তার গানের ধরন আলাদা ছিল। তাই হিংসা করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তার কথায়, ‘‘পঞ্চমদা-র সুরে কাটি পতঙ্গ ছবিতে আমি গেয়েছি না কোয়ি উমঙ্গ। আর ও গেয়েছে মেরা নাম হ্যায় শবনম। আমি চাইলেও ওর গাওয়া গানটা গাইতে পারতাম না। কারণ আমাদের দু’জনের গান গাওয়ার ধরণই আলাদা ছিল।’’